কালের সংবাদ ডেস্ক: সিরাজগঞ্জ পৌর নির্বাচনে কাউন্সিলর পদে বিজয়ী তরিকুল ইসলাম খানের মৃত্যুর খবরে বিক্ষুব্ধ ব্যক্তিরা এলাকার বাড়িঘর ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করেছেন।
রোববার (১৭ জানুয়ারি) দুপুরে কাউন্সিলর হত্যাকারীদের বিচারের দাবিতে নতুন ভাঙ্গাবাড়ী এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল শাহেদনগর ব্যাপারীপাড়া এলাকায় প্রবেশ করে প্রায় শতাধিক বাড়িঘর ভাঙচুর, লুটপাট ও কয়েকটি বাড়িঘর ও দোকানে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
হাসপাতাল থেকে বিজয়ী কাউন্সিলর তরিকুল ইসলাম খানের মৃত্যুর খবর পাওয়ার পর থেকে শনিবার (১৬ জানুয়ারি) রাত থেকে রোববার দুপুর পর্যন্ত পৃথক পৃথক এ ঘটনাগুলো ঘটে। এ ঘটনায় এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
এদিকে নিহত তরিকুলের বাড়ি ও ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। এ সময় তদন্তের মাধ্যমে অপরাধীদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার আশ্বাস দিলেন রাজশাহী রেঞ্জের অতিরিক্ত বিভাগীয় পুলিশ কমিশনার টি এম মুজাহিদুল ইসলাম।
পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয় সূত্রে আরও জানা যায়, শনিবার (১৬ জানুয়ারি) রাতে শহরের ব্যাপারীপাড়ার আব্দুস সালামের বাসভবনে হামলা চালানো হয়। এ সময় বাসার গ্যারেজে থাকা একটি প্রাইভেট কার, দুটি পিকআপ ও বেশ কয়েকটি মোটরসাইকেলে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। এছাড়া আরও দুটি বাড়িতে হামলা চালানো হয়।
ক্ষতিগ্রস্ত বাসভবনের মালিক আবদুস সালাম বলেন, ‘কেন বাড়িতে হামলা করা হলো, বুঝতে পারছি না। বিক্ষুব্ধরা বাড়ির একটি প্রাইভেট কার, দুটি পিকআপ ও বেশ কয়েকটি মোটরসাইকেলে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে’।
ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ির মালিক বীর মুক্তিযোদ্ধা গাজী আজিজুর রহমান ও বীর মুক্তিযোদ্ধা গাজী আব্দুল মজিদের বলেন, আমাদের পরিচয় দিয়ে বারবার নিষেধ করার পরও তারা বাড়িতে ভাঙচুর করে।
টনি স্টোরের মালিক ছানোয়ার হোসেন জানান, আমার দোকানে হামলা চালিয়ে লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। এতে আগুনে সব পুড়ে যায়। এতে ক্ষতির পরিমাণ ১০ লক্ষ টাকা।
সিরাজগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের স্টেশন অফিসার আতাউর রহমান বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়।
সিরাজগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বাহাউদ্দিন ফারুকী রোববার (১৭ জানুয়ারি) সকাল ৯টার দিকে বলেন, পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় মামলার প্রক্রিয়া চলছে।
এর আগে শনিবার রাতে পৌরসভার ৬নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী তরিকুল ইসলাম খানকে বিজয়ী ঘোষণার পর পরাজিতপক্ষের সঙ্গে কথা-কাটাকাটির জেরে হামলার ঘটনা ঘটে। এতে ওই কাউন্সিলর প্রার্থী গুরুতর আহত হন।
দ্রুত তাকে উদ্ধার করে সিরাজগঞ্জ শহরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। পরে লাশ সিরাজগঞ্জ ২৫০ শয্যার বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়।
নিহত তারিকুল ইসলাম শহরের নতুন ভাঙ্গাবাড়ি মহল্লার আব্দুল কুদ্দুসের ছেলে। তিনি পৌরসভার ৬নং ওয়ার্ডের সাধারণ কাউন্সিলর পদে ডালিম প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে ৮৫ ভোটে জয়ী হন।
এদিকে সিরাজগঞ্জ নিহত তরিকুল ইসলাম খানের বাড়িতে এখন চলছে শোকের মাতম। তার মৃত্যুতে বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে পুরো এলাকা। সকাল থেকেই চলছে এলাকায় বিক্ষোভ ও মিছিল।
এস হোসাইন/
Leave a Reply