নিজস্ব প্রতিবেদক: বৈশ্বিক মহামারি করোনা ভাইরাসের প্রভাবে মানুষ গৃহবন্দি হয়ে পড়ে এবং আর্থিকভাবে ক্ষতির মুখে পড়েছেন নিম্ন আয়ের মানুষগুলো। ঠিক তখনই এক অসহায় বিধবা দুঃস্থ নারীর ত্রাণ (চাউল) প্রার্থীর আবেগধর্মী ৩৮ সেকেন্ডের ভিডিও মুঠোফোনে ধারণ করে ফেইসবুকে আপলোড দেয়ায় চাঁদপুর জেলার বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ পরিষদ (বাসকপ)-এর ভাইস চেয়ারম্যান জাতীয় `দৈনিক আলোকিত সকালের’ শাহরাস্তি উপজেলা প্রতিনিধি, এবং `দূর্বার নিউজ অনলাইন পোর্টালের’ সম্পাদক সাংবাদিক মোঃ রুহুল আমিনের নামে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ২০১৮ অনুযায়ী মামলা দায়ের করা হয়েছে। যার মামলা নং ১৪, তারিখ ২৮/৪/২০২০ শাহরাস্তি থানা, জেলা চাঁদপুর ।
মামলার বাদী চাঁদপুরের শাহরাস্তি পৌরসভার ৪ নং ওয়ার্ডের কমিশনার সাহাব উদ্দিন আলম(৪৮) এ ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ পরিষদ বাসকপের চেয়ারম্যান এটিএম মমতাজুল করিম ও মহাসচিব এম এ মমিন আনসারী গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে নেতৃবৃন্দ বলেন দেশে করোনা মহামারীর চরম সংকট মুহুর্তে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী অসহায় ও দরিদ্র মানুষের জন্য পর্যাপ্ত ত্রাণ সহায়তা দিচ্ছেন এবং বলছেন যেন একটি লোকও অনাহারে না থাকে । আপনারা জনপ্রতিনিধি ও দলীয় নেতাকর্মীরা প্রতিটি বাড়ী বাড়ী গিয়ে খাবার পৌঁছে দিন । দরিদ্র ও মধ্যবিত্তদের তালিকা জমা দিন সরকার তাদের সহায়তা করবে। সেখানে একজন সাংবাদিক দরিদ্র মহিলার আকুতি ফেসবুকে তুলে ধরায় উল্টো তার নামে মামলা দায়ের করা কতটুকু যুক্তি সংগত সংশ্লিষ্ট প্রশাসন ও এলাকার সচেতন মহলের কাছে জিজ্ঞাসা।
আমরা এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি সেই সাথে অবিলম্বে এই মামলা প্রত্যাহার করার জন্য পুলিশের মাননীয় আইজিপি মহোদয় এর দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। মামলার এজাহারে বাদী উল্লেখ করেন, “এই মর্মে অভিযোগ দায়ের করিতেছি যে, চলমান করোনা ভাইরাস কোভিট-১৯ পরিস্থিতিতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা গরিব, অসহায় ও মধ্যবৃত্ত পরিবারের মাঝে ত্রান বিতরনের যে ঘোষণা দিয়েছেন সেই ঘোষণা অনুযায়ী ত্রান সহায়তা প্রদানের লক্ষ্যে চাঁদপুর-৫ (হাজীগঞ্জ-শাহরাস্তি) আসনের মাননীয় সংসদ সদস্য মেজর (অবঃ) রফিকুল ইসলাম বীর উত্তম, এমপি মহোদয় গরিব, অসহায় ও মধ্যবৃত্ত পরিবারের মধ্যে উপজেলা প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধি দ্বারা ত্রান বিতরণ করিয়া আসিতেছেন।
উক্ত আসামী গত ২৪/৪/২০২০ইং তারিখ বেলা আনুমানিক ১১.২৬ ঘটিকার সময় তাহার ফেসবুক আইডি Ruhul Amin (তরুন) হইতে একটি ভিডিও পোষ্ট করেন । এবং হুবহু স্যাটােসটি তুলে ধরা হলো – “জানি না কি বলবে সূধী সমাজ ? একজন মানুষ ভাত খাওয়ার আকুতি জানিয়ে কিভাবে কথা বলতে পারে এটা কেউ কাছ থেকে না দেখলে বুঝার উপায় নেই।এবিষয়ে কোন কথা লিখলে একশ্রেণির জনপ্রতিনিধির গায়ে আগুন ধরে।দৌড়ে যায় মামলা করতে,পারলেতো হামলাও করে। অসহায় এই মানুষের পাশে দাঁড়ানোর কেউ আছেন ? নাম-আঞ্জুমান আরা বেগম,পিতা-আব্দুর শুকুর,গ্রাম-সোনাপুর, শাহরাস্তি পৌরসভার, ৪ নং ওয়ার্ড,শাহরাস্তি, চাঁদপুর।”
সাংবাদিক রুহুল আমিন আরও বলেন, আমি একজন সাংবাদিক ও শিক্ষক। করোনা ভাইরাসের কারনে সরকারি ঘোষণা অনুযায়ী দেশব্যাপী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ। সাংবাদিকতার দায়িত্বও সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে সীমিত পরিসরে পালন করছি। উক্ত মিথ্যা মামলায় আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে তা সম্পূর্ণ অসত্য, মিথ্যা, বানোয়াট এবং কাল্পনিকও বটে। শুধুমাত্র আমাকে নিছক হয়রানি ও হেয়প্রতিপন্ন করার জন্য বাদী তা করেছেন বলে আমি মনে করি।
এদিকে সচেতন মহল বলেন, একটি ভিডিও আপলোড নিয়ে আলোচনা হতে পারে।কারন ভিডিওটি সাংবাদিক তার আইডি থেকে দিয়েছেন।তাও সেটি নিজের জন্য নয় মানবকল্যাণে।যদি তথ্যগত কোন ভুল থাকে বা কারো বিপক্ষে গিয়ে থাকে।তাহলে এক্ষেত্রে সামান্য আলাপচারিতার মাধ্যমেই বিষয়টিই শেষ হতে পারে। কেননা শাহরাস্তিতে সাংবাদিক ও জনপ্রতিনিধিগণের সু-সম্পর্ক বেশ পুরোনো। সেখানে জনপ্রতিনিধি হয়ে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে এভাবে মামলা দাওয়র করা দুঃখজনক। তাই অবিলম্বে এ ঘটনা সমাধানে স্থানীয় সাংসদসহ সুধী মহলের হস্তক্ষেপে শাহরাস্তিতে সাংবাদিক ও জনপ্রতিনিধিদের সু-সম্পর্ক অটুট রাখার প্রত্যাশা করেন সবাই।
এম কে ইসলাম/
Leave a Reply